Breaking News
recent

রূপ, যৌবন, উজাড় করেও রেহাই পেল না Nari Nirjaton Er Ghotona

Nari Nirjaton Er Ghotona
রূপ, যৌবন, উজাড় করে দিয়েও নারীটি রেহাই পেল না

হায়রে জ্বীবন.! আজ কেও কেও বেচেঁ থেকেও মরে আছে এই সমাজের মধ্যে।
রত্না নামে একটি মেয়ে প্রায়ই আমাকে ফোন করে। সে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে চায়। রত্না এলো একদিন আমার বাসায়। ২২-২৩ বছরের মেয়ে; গায়ের রঙটি চমৎকার। চেহারা ও স্বাস্থ্য সুন্দর। সাথে এক বছরের মেয়ে। রত্না বলা শুরু করল, ‘আপা, এই জানোয়ারের সাথে আর সংসার করতে চাই না।’ জানোয়ার শব্দটি শুনে নার্ভে ধাক্কা লাগে। আগের দিন একটি মাদক মামলার আসামি জামিন করিয়েছি। স্বামীর মুক্তির খবর শুনে আসামির স্ত্রী জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। স্বামীকে ঘরে ফিরিয়ে নেয়ার যে আনন্দ তার কান্নায় দেখেছি, সেটি আসলে কান্না নয়, প্রিয় মানুষটিকে কাছে পেয়ে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ। তার ভালোবাসার প্রবল স্রোত কান্না হয়ে আমার কালো কোটটি ভিজিয়ে দেয়। বাকরুদ্ধ হয়ে আনন্দের এই কান্না দেখেছি। একটি মেয়ের উজাড় করা ভালোবাসার মানুষটি আসামি হয়েছে। কিন্তু তার ওপর মেয়েটির অধিকারের স্বত্ব বিনষ্ট হয়নি।


সেদিন একজন ভাগ্যবান স্বামীকে চিনলাম যাকে স্ত্রী আদালতের বারান্দায় অশ্রু দিয়ে ভালোবাসার প্রমাণ লিখে গেছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালোবাসারই হওয়া উচিত। যা হোক, রত্না তার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে চায়। মনোযোগ দিয়ে শুনেছি তার কথা। রত্না বলেছে, “বাবা-মায়ের অমতে বিয়ে করেছি। জানতাম না, সে ‘নেশা’ করে। আপা, ও কোনো কাজ করে না। সারা দিন ঘুমায়। রাত ১টা-২টায় বাসায় ফেরে। এসেই টিভির সামনে বসে। ভোর বেলায় ঘুমায়। কিছু বললে গালাগালি করে। গায়ে হাত তোলে। সন্তানের দুধ কেনার পয়সাও দেয় না। কোনো দিন আমাকে একটা ড্রেস পর্যন্ত কিনে দেয়নি। আমার মাকে এসব কিনে দিতে হয়।” দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, আর কী করে? (এ প্রশ্নের উত্তরটা আমার জানা, কমন প্রশ্নের সহজ উত্তর) রত্না গলাটা একটু নামিয়ে বলে, ‘চরিত্র খারাপ আপা, আজেবাজে মেয়েদের কাছে যায়। জানোয়ারের সংসার আর করতে চাই না। টাকা কত লাগবে?’ বুঝতে পারছি না কী বলব। রত্না যা বলছে, ‘তা শুধু ওর ঘটনা নয়। যে মেয়েরাই ডিভোর্সের জন্য আসে, তাদের প্রত্যেকের সমস্যা অভিন্ন। নির্যাতনের চিত্র একই। স্বামীর চেহারাটা শুধু আলাদা। অনেক মেয়েই নির্যাতিত, কেউ শারীরিকভাবে, কেউ মানসিকভাবে।’

আমার সবচেয়ে প্রিয় মেয়ে মানুষ, যার ব্যক্তিত্ব ও জীবনাদর্শ আমাকে মুগ্ধ করে, যার মেধা আমাকে গর্বিত করে, তিনি হিলারি ক্লিনটন। হোয়াইট হাউজে মনিকার সাথে স্বামী ক্লিনটনের পরকীয়া তার মতো মহিলার জন্য কতটা অসম্মান আর মর্মান্তিক মানসিক নির্যাতন, তা বলা বাহুল্য। তারপরও স্বামীর প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা। স্বামীর ‘বিপদে’ হিলারি স্ত্রী হয়ে যে সমর্থন দিয়েছেন, এতে তার মহানুভবতাই দেখেছে বিশ্ববাসী। কিন্তু তার ভেতরের ক্ষতটা কেউ দেখেনি। হোয়াইট হাউজের সাদা দেয়ালের ভেতরে হিলারি গুমরে কেঁদেছেন। মনিকার মতো সাধারণ শিক্ষানবিশ কর্মচারীর সাথে রাষ্ট্রপতি স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক যে, তাকে আহত করেনি এটা কেউ হলফ করে বলতে পারবে না। লজ্জায় অপমানে তিনি যে দগ্ধ হয়েছেন- হোয়াইট হাউজের দেয়ালগুলোই কেবল এর সাক্ষী। স্বামী অন্যের কাছে গেলে স্ত্রীদের যে কষ্ট হয়, হিলারিরও তা হয়েছিল। স্বামীকে সাপোর্ট দিয়ে ক্ষমা করে মহানুভবতার যে দৃষ্টান্ত হিলারি গড়েছেন, এমন ‘মহান বউ’ সবাই হওয়া সম্ভব নয়।

রতœাও ‘মহান বউ’ হতে পারছে না। স্বামীর নির্যাতনে সে কষ্ট পেয়েছে। তার সুন্দর শরীর নিয়েও স্বামী তৃপ্ত নয়, অন্য মেয়ের সাথে নিষিদ্ধ সম্পর্ক স্থাপনে দ্বিধা করে না, এমন কু-স্বামীর ঘর যদি আর না করতে চায়, এটা স্ত্রীর অপরাধ নয়। অনেককে বলতে শুনেছি, ‘স্বামীকে কন্ট্রোল করতে পারো না; কেমন বউ তুমি?’ কিন্তু স্বামী অন্য মেয়ের কাছে গেলে এর দায় কেন স্ত্রী নেবে? স্বামীর চরিত্র খারাপ হয়ে গেলে সেটা কি অপরাধ নয়? ‘স্বামীর মার খাও, মুখ বুজে সব অত্যাচার মেনে নাও, স্বামী অন্য মেয়ের কাছে গেলে সতীসাধ্বী স্ত্রী হয়ে মন্ত্র বলে তাকে ফেরাও। নইলে তুমি ব্যর্থ। অযোগ্য স্ত্রীর অপবাদ নিয়ে তোমাকে এ সমাজে টিকে থাকতে হবে। স্বামী মন্দ হোক, অসৎ হোক, স্বামী তো স্বামীই। সব অবস্থায় স্ত্রী তার সেবা করতে হবে। সে রোজগার না করলে স্ত্রী তাকে রোজগার করে খাওয়াবে।’ এমন মানসিকতা অযৌক্তিক বলে মেনে নেয়া যায় না। অযোগ্য, অসৎ, অকর্মা, অমানুষ হলে স্বামীর সঙ্গে ‘আপস’ করে টিকে থাকতে পরামর্শ দিই না। এদের ব্যাপারে ডিভোর্স একটি প্রতিবাদ।

স্বামী-স্ত্রী দু’জন দুই মেরুর হলে সংসার হয় ‘নরক সমান’। সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকলেও ভালোবাসার বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। ভালোবাসা না থাকলেও সমাজের দিকে তাকিয়ে সংসার টিকিয়ে রাখার প্রহসন অনেকের জীবনে।
রত্না তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে আবার পড়াশোনা করতে চায়। তার ইচ্ছাশক্তি আমাকে মুগ্ধ করে। নিজের বাবার কথা মনে পড়ে। সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু লোভ করেননি। এই নির্লোভ, সৎ মানুষটি আমাকে আশাবাদী করে তোলেন। বাবার মতো হতে পারি না। কিন্তু তাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করি। রত্মাকে বললাম, আমাকে শুধু খরচের টাকাটা দিন। ফি দিতে হবে না। রতœা পরদিন টাকা এবং তার মাকে নিয়ে আসবে বলে চলে যায়।

কয়েক দিন পরে একটি ছেলে আসে আমার বাসায়। সে আনসার বাহিনীতে চাকরি করে। তার সমস্যা হলো, দুই বছর আগে সে এলাকার একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। কিন্তু মাত্র তিন মাসের মাথায় স্ত্রী তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এমনকি মোবাইল নম্বরটিও বদলে ফেলে। ছেলেটি মাসে মাত্র নয় হাজার টাকা বেতন পায়। তার স্বল্প বেতন আর নিরীহ মুখখানা দেখে খুব মায়া হলো। সে তার স্ত্রীকে ফেরত চায়। লিগ্যাল নোটিশ দিতে অনুরোধ করে। রংপুর জেলার কোনো এক অখ্যাত গ্রামের বাসিন্দা, তার স্ত্রীকে লিখলাম নোটিশ। যে কেউ পড়লে বুঝতে পারবেন, এটা কোনো আইনি নোটিশ নয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যস্থতা করা আবেগঘন চিঠি। আমার সব আবেগ দিয়ে কাকুতি-মিনতি করেছি যেন মেয়েটি নিরীহ স্বামীর কাছে ফিরে আসে। হোক না স্বল্প বেতন, যদি সে ভালোবেসে সঠিক মর্যাদা দিয়ে স্ত্রীকে রাখতে পারে, সেটাই যথেষ্ট। সে স্ত্রী আর ফিরেনি। ফলে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

রতœা ফোন করল প্রায় তিন মাস পর। রতœা এলো। একসাথে রিকশায় কোর্টে যেতে যেতে তার জীবন যুদ্ধের গল্প শোনায়। কখনো কেঁদে, কখনো অভিমানে, কখনো ক্রুদ্ধস্বরে। ‘স্বনামধন্য’ স্বামী তার চেয়ে বয়সে বড় তার এক ফুফাতো বোনকে ঘুমের মধ্যে জড়িয়ে ধরেছে। বুঝতে পারলাম, এই ঘটনাই রত্নাকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ করেছে।
তার ডিভোর্সের কাগজপত্র তৈরি করে যখন তাকে স্বাক্ষর করতে বললাম, কলমটা হাতে নিয়ে শুরু করল কান্না। কাঁদারই কথা। সাইনটা করার পরই জীবনটা বদলে যাবে। ডিভোর্সের পর রতœা আমাকে আর ফোন করেনি। খুব জানতে ইচ্ছে, ও কেমন আছে? পড়াশোনা করছে তো? আশায় আছি, একদিন রত্না ফোন করে বলবে, আপা, ভালো আছি। ভালো চাকরি করছি। টাকার জন্য, ভাত-কাপড়ের নিশ্চয়তার জন্য কোনো রত্নাকেই যেন অমানুষের সংসার করতে না হয়। অর্থনৈতিক প্রয়োজন যেন কোনো মেয়েকে অসহায় করে না তোলে।

(২)
তখন বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছি। মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করার জন্য অনেক সিনিয়র আইনজীবীর কাছে বিভিন্ন প্রশ্নের সমাধান করতে গিয়েছি। একদিন বিকেলে পরিচিত এক আইনজীবীর কাছে কিছু প্রশ্ন নিয়ে গিয়েছি। উনি রুমে একা। বললাম, আমাকে একটু হেল্প করেন। প্রশ্নপত্রটি হাতে নিয়ে উনি চুপ করে দেখছিলেন, সোফায় বসে আছি। কিছুক্ষণ পর প্রশ্নপত্রটি আমার হাতে দিয়ে বললেন, ‘আপনি তাড়াতাড়ি চলে যান। আপনাকে এত ভালো লাগছে যে, নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব না।’ হতভম্ব হয়ে গেলাম তার কথা শুনে। চলে এলাম। উনার এই ‘আনকন্ট্রোলড মুড’ আমাকে কতটা বিব্রত আর অসহায় করে দিলো, বলতে পারলাম না। সারা রাস্তায় ভাবতে ভাবতে এলাম। আমি তো তেমনটা বোধ করিনি। একটা মেয়ে মানুষকে শুধু একা পেয়েই পুরুষ আনকন্ট্রোলড হয়ে যায়? পুরুষের কি তবে নিজের ওপর ‘কন্ট্রোলিং পাওয়ার’ নেই?

‘মি. অমুক’ সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করেন। বার কাউন্সিলের ইন্টিমেশন ফরম নোটারি করতে গিয়ে আমার পরিচয়। প্রথম দিন আমাকে যথেষ্ট খাতির করেন, নিজের কার্ড দিলেন। আমার ফোন নম্বর নিলেন। উনার সাথে জুনিয়রশিপ করার প্রস্তাব দেন। আমাকে প্রায়ই ফোন করেন। অ্যাডভোকেটশিপ লিখিত পরীক্ষার ফরম জমা দিতে গিয়ে উনার সাথে দেখা করতে যাই। চা-বিস্কুট খাওয়ালেন।

অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছিলাম, আমাকে কিছু একটা বলতে চাচ্ছেন, বসতে বলে বাইরে গিয়ে কিছুক্ষণ পর ফিরে এলেন। বসতে বসতে বললেন, ‘একটা কথা বলতে চাই। কিছু মনে করো না’। বিনয়ের সাথে বললাম, ‘না, স্যার।’ চেয়ারে হেলান দিয়ে সরাসরি আমার দিকে তাকালেন। অনেকটা আবেগময় স্বরে বললেন, তুমি আমাকে ‘স্যার’ বলো না। শুনে হাসার চেষ্টা করলাম। ঠোঁট দুটো ফাঁক হলো, কিন্তু হাসি বেরোল না। ঢোক গিলতে গিয়ে বুকের মাঝে আটকে গেল, উনার বাইরে যাওয়ার উদ্দেশ্যটা স্পষ্ট হলো। সাহস সঞ্চারের জন্য এই বহির্গমন। বাম হাতটা কপালে ঠেকিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম। উনি বলতে লাগলেন, ‘তোমাকে খুব ভালো লাগে। তোমার ফিগারটা সুন্দর’- শুনে চোয়াল দু’টি শক্ত হয়ে দাঁতের সাথে আটকে যায়। মাথাটা ঝিম ঝিম করছিল। উনি বলতে থাকেন, ‘তোমাকে নিয়ে একদিন বেড়াতে যাবো। অনেক ঘুরব। আমার বয়স ৫৫।

জানো, এ বয়সটা অনেক খারাপ। মন শুধু ওড়াওড়ি, ছুটোছুটি করে। ঘরের মানুষটাকে আর ভালো লাগে না।’ রাগ হলো আমার। কী স্পর্ধা! ঘরের বউটাকে আর ভালো লাগে না বলেই ‘পরের মানুষ’ খুঁজে বেড়াচ্ছে? কিন্তু ঘরের মানুষটা রূপ, যৌবন, আবেগ, অনুভূতি- সব বেঈমান স্বামীটাকে উজাড় করে দিয়েছে। যে নারীটি নিজের জীবন, সুখ-দুঃখ সব কিছু স্বামী-সন্তানের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন, আজ তাকে আর ভালো লাগছে না। একটি মেয়ের দীর্ঘ দিনের ভালোবাসার মানুষ আজ তাকে কোথায় ছুড়ে মারছে? ফোন বেজে ওঠে। উঠতে উঠতে বললাম, ‘আমার ছেলে ফোন করেছে, যাই।’ উনি ব্যস্ত হয়ে বললেন, তুমি তো কিছুই বললে না? আরেক দিন বলব বলে চলে আসি। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। এতগুলো বিশ্রী কথা বসে বসে শোনার জন্য নিজেকেই গালি দিতে ইচ্ছে করছিল। এরপর উনি আমাকে বহুবার ফোন করেছেন। কিন্তু কোনো কথা বলিনি। সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে অনেকেই তাকে চেনেন। তার হাত ধরে আমার ওকালতি জীবন শুরু করতে চেয়েছিলাম।

সিটি করপোরেশনের প্যানেল ল’ ইয়ার হওয়ার জন্য ২০১৫ সালে আবেদন করেছিলাম। একজন পরামর্শ দিলেন, সরকারি দলের কোনো প্রভাবশালী নেতাকে দিয়ে ‘রিকমেন্ড’ করাতে। পরিচিত এক নেতাকে ফোন দেই। উনি আমাকে পরদিন সকাল ১০টায় ওনার অফিসে যেতে বলেন। সে মোতাবেক গেলে উনি আমাকে বোঝালেন, ‘এটা খুব কঠিন বিষয়। তবু রিকমেন্ড করে দিচ্ছি’ বলে সিগারেট ধরালেন। অস্বস্তিবোধ করি। কারণ সিগারেটের ধোঁয়া আমার সহ্য হয় না।

হঠাৎ লক্ষ্য করলাম, ভদ্রলোক সিগারেট শেষ না করেই ফেলে দিলেন। চেয়ার ছেড়ে দরজায় গিয়ে দাঁড়ালেন। বাইরে উঁকি দিয়ে কী যেন দেখলেন। এমনকি দরজাটা আটকে দিলেন। আঁৎকে উঠি। আড় চোখে তাকিয়ে দেখি, লোকটি গুটি গুটি পায়ে আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। ফাইলটা বুকের মাঝে চেপে মেরুদণ্ডটা টান টান করে বসি। আমার শ্বাস-প্রশ্বাস এত জোরে পড়ছিল যে, আমার গায়ে এসে লাগে। সাহস জোগাড় করার চেষ্টা করি। উনার হাত দুটো যখন আমার দিকে এগিয়ে আসে, দ্রুত দাঁড়িয়ে পড়ি। আর চিৎকার করে উঠি, উড়হঃ ঃড়ঁপয সব. অসভ্য লোকটি থতমত খেয়ে নেমে যায়। এত ভয় জীবনেও পাইনি। আমি কাঁপছিলাম। উনি বললেন, শুধু তোমাকে একটু আদর করতে চেয়েছিলাম। তা ছাড়া ভেবেছি, তোমাকে জড়িয়ে ধরলে তুমিও আমাকে জড়িয়ে ধরবে। বুঝতে পারিনি, তুমি এভাবে ৎবধপঃ করবে।’ কাঁপতে কাঁপতে বললাম, দেখুন, এটা আপনার অফিস, আমি চিৎকার দিলে আপনারই সম্মান নষ্ট হবে। প্লিজ, আপনি সরে যান?’ এ কথা বলেই বেরিয়ে আসি। তার রিকমেনডেশন নেয়া নিইনি। যার চরিত্রের কোনো জোর নেই, এমন লম্পট নেতার রিকমেনডেশনের প্রয়োজন নেই।

একটা মেয়ের গায়ে হাত দিয়ে ফেললে তার আর কোনো কিছু করার থাকে না। কিন্তু এটা মারাত্মক ও জঘন্য অপরাধ। কারো শালীনতায় আঘাত করা উচিত নয়। রাস্তার বখাটেদের সাথে এ ধরনের ভদ্রবেশী ওপর তলার পুরুষগুলোর কোনো তফাৎ নেই। তারা হয়তো ভাবে, অশালীন আচরণ করলে মেয়েরা লজ্জায় এ কথা কারো কাছে বলতে পারবে না। কিন্তু এসব অনিয়ন্ত্রিত অপুরুষের মনে রাখা উচিত, কোনো মেয়ের শরীর স্পর্শ করার অধিকার তাদের নেই বিন্দুমাত্র। এদের অনেকে বলে, তোমাকে test করছিলাম। You have passed কিন্তু এভাবে অন্যের চরিত্র যাচাই করতে গেলে নিজের চরিত্র খোয়াতে হয়- এ সহজ বিষয়টা এসব কাপুরুষের বোধগম্য নয়। এমন অনিয়ন্ত্রিত আচরণ একটা মেয়ের কত বড় মানসিক যন্ত্রণার কারণ হতে পারে, এটা তাদের বোঝা উচিত।

Tags: বাংলা সংবাদ, বাংলা নারী নির্যাতন সংবাদ, রেফ, ধর্ষন, হত্যা, Bangla news, Bangla shongbad, Bangla nari nirjaton shongbad, Ref,Dhorshon, Murder, Nari hotta.

No comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.